

আদালতের নির্দেশ না মানার অভিযোগ বেরোবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে!
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি রংপুরের কন্ঠকে জানাতে ই-মেইল করুন- news.rangpurerkantho@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
আদালতের নির্দেশ পূর্ণাঙ্গরূপে না মানার অভিযোগ উঠেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ভ‚ক্তভোগীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলে আদালত থেকে যে নির্দেশ দেয়া হয় তাও পরিপূর্ণরুপে মানে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে ভ‚ক্তভোগীরা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকআর হন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
তথ্য মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে মাহামুদুল হককে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে বারবার আদালত অবমাননা করে চলেছেন উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। বিশ^বিদ্যালয় সিন্ডিকেট ও আদালতের কাগজপত্র থেকে জানা যায়, নিয়োগ বোর্ড কর্তৃক সুপারিশকৃত মাহামুদুল হক নিয়োগ না পেয়ে ২০১৩ সালে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। এর প্রেক্ষিতে মাহামুদুলকে ‘কেন নিয়োগ বোর্ড-এর সুপারিশ অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হবে না’ মর্মে জানতে চান আদালত। মাহামুদুল-এর জন্য ওই পদটি সংরক্ষণ করার নির্দেশও দেন হাইর্কোট। কিন্তু তৎকালীন বিশ্ববিদ্যলয় কর্র্তৃপক্ষ ওইসময় কোন জবাব দেয়নি। পরে ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর উচ্চ আদালত এক রায়ে মাহমুদুলকে ১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগ বোর্ড-এর সুপারিশ অনুযায়ী স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেন। রায় থাকা সত্তে¡ও মাহামুদুলকে নিয়োগ না দিয়ে ২০১৮ সালের ৬ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ওই পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এবং রহমতউল্লাহ নামের একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়। যা উচ্চ আদালতকে না মানার বহি:প্রকাশ। গত ৪ মার্চ ‘সুপ্রীম কোর্টের রায় অমান্য করে ফের শিক্ষক নিয়োগ’ শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে শনিবার (৯ মার্চ) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ তম সিন্ডিকেটের(জরুরী) মাধ্যমে তার নিয়োগ কার্যকর করা হয়। আদালতের রায় অনুযায়ী তাঁর বেতন-ভাতা, জ্যেষ্ঠ্যতাসহ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। পরে ২০ নভেম্বর বেতন-ভাতা, জ্যেষ্ঠ্যতাসহ ক্ষতিপূরণ চেয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করলেও কোন সদুত্তর পাননি মাহমুদুল।
এদিকে, আদালতের নির্দেশ মেনে তৎকালীন উপাচার্য নুরুন্নবী ওই নিয়োগ বোর্ড বাতিল করলেও বর্তমান উপাচার্য কলিমউল্লাহ একই বিভাগে অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক তাবিউর রহমানকে রক্ষা করতে বিভিন্নভাবে আদালত অবমাননা করেই চলেছেন। সূত্র জানায়, বর্তমান উপাচার্য বিতর্কিত এই শিক্ষককে হল প্রভোস্ট ও জনসংযোগ দপ্তরের সহকারি প্রশাসকসহ প্রশাসনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দিয়েছেন।^
এ ব্যাপারে মাহামুদুল হক বলেন ‘২০১৯ সালের ১০ মার্চ থেকে প্রভাষক পদে আমার নিয়োগ কার্যকর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অথচ মহামান্য হাইকোর্ট আমাকে ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারির বাছাই বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী নিয়োগ দিতে বলেছেন। ওই সময় থেকে আমাকে নিয়োগ, বেতন-ভাতা, জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি দিতে হবে। বাছাই বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী নিয়োগ না দেওয়ায় আদালত অবমাননা করা হয়েছে। ’
আংশিক রায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে স্বীকার করে গত ২০ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ‘আদালতের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা আংশিক রায় বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।’
জানতে চাইলে উপাচার্য ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ আরও বলেন, ‘এটি সাত বছরের সমস্যা। ওই বিভাগে আরও অনেক সমস্যা আছে। সিনিয়রিটির কিছু বিষয় আছে। আদালতের রায়ের প্রতি আমরা শতভাগ শ্রদ্ধাশীল। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা মাহমুদুল হককে নিয়োগ দিয়ে সারা দেশের মধ্যে নজির স্থাপন করেছি। তাঁর বেতন-ভাতা, জ্যেষ্ঠতা ও ক্ষতিপূরনের বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’