
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এ সাধারণ ছাত্রের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৫শে ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অভিযোগের ভিত্তিতে এই সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ করা হয় বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইজার আলী।
তাজহাট মেট্টোপলিটন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তারুজ্জামান প্রধান বলেন, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চিঠি পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইজার আলীকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানা যায় যে, গত ১৮/০২/২০২১ইং তারিখে রেজিস্টার বরাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরস্বতী পূজা উদযাপন কমিটি ২০২১ এর আহবাহক, সদস্য সচিব এবং ৩ জন সদস্য স্বাক্ষরিত একটি আবেদনপত্র দেয়া হয়। যাতে, সরস্বতী পূজা উদযাপনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইসবুক) নেতিবাচক বিবৃতি এবং মন্তব্য প্রদানের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন করা হয়।
উক্ত আবেদনে সংযুক্তি হিসেবে ফেইসবুকে প্রদানকৃত এ ধরণের কিছু নেতিবাচক বিবৃতি এবং মন্তব্য এর প্রিন্ট কপি প্রদান করা হয়।
এরপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ইং তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ তাজহাট থানায় উক্ত বিষয়ে রেজিস্টার স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। যা ২৫/০২/২০২১ইং তারিখে একটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। সাধারণ ডায়েরি নং-১১১৭ ।
এ বিষয়ে পূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক প্রদীপ কুমার সরকার বলেন, ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত পূজা অনুষ্ঠানে উপাচার্যের উপস্থিতি নিয়ে কতিপয় ব্যক্তি বাজে মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়। এসব স্ট্যাটাস আমাদের পূজা উদযাপন কমিটির চোখে পড়লে আমরা মিটিং করে রেজিস্ট্রারকে লিখিত আবেদন দেই।
তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানায় অভিযোগের বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক শিক্ষার্থী মাহমুদ মিলন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে কথা বলার অধিকার রাখে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এরূপ কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টার শামিল। আমি মনে করি এটি শিক্ষার্থীদের বাক স্বাধীনতায় আঘাত হেনেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই জিডির মাধ্যমে বাক স্বাধীনতার চর্চাকে নষ্ট করেছেন। এছাড়াও এই জিডির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
উক্ত বিষয়ে সমালোচনাকারী একজন বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যায় এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় কথা বলি।গত ১৬ তারিখে পুজা নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেই সেখানে আমি অপবিত্র ব্যক্তির কথা বলি সেখানে কারও নাম আমি উল্লেখ করি নাই।অপবিত্র ব্যক্তি যে কেও হতে পারে সেখানে আমার নামে অভিযোগ দেয়া মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। সবচেয়ে বড় বিষয় একজন পতাকা অবমাননাকারীও জাতির কাছে অপবিত্র ব্যক্তি।উক্ত পবিত্র পুজাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননাকারী ব্যক্তিরাও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।একজন জাতীয় পতাকা অবমাননাকারী কি দেশের মানুষের কাছে অপবিত্র ব্যক্তি নয়?? আমি প্রশ্ন রাখলাম!
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবাহক ড. মতিউর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য ভয়ের সংস্কৃতি চালু করেছেন যাতে যে কেউ তার বিরূপ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কথা বলতে না পারে। এবং এটি সেই প্রক্রিয়ার একটি অংশমাত্র।
উক্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালের মোবাইলে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। উপাচার্যকে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।